বুধবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:১৯ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স থেকে নার্সিং সুপারভাইজার পদে পদোন্নতি (নিজ বেতনে) দেয়ার ঘটনায় বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালের নার্সিং সেবা তত্ত্বাবধায়ক ও পদোন্নতি দেয়ার বিষয়ে গঠিত বোর্ডের সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে পদোন্নতি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। যদিও নার্সিং সেবা তত্ত্বাবধায়ক সেলিনা আক্তার দাবি করেছেন পদোন্নতি দিয়েছে বোর্ড, এখানে আমার একক কোনো সিদ্ধান্ত নেই। আর অর্থ লেনদেনের বিষয়টি আমার জানা নেই।
শেবাচিম হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এ হাসপাতালে শুধুমাত্র সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে রয়েছে ৯১০ জন। সম্প্রতি এ হাসপাতালের ৭ জন নার্সিং সুপারভাইজার অবসরে যান। এর কাজের সুবিধার্থে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ছাড়াই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নার্সিং সুপারভাইজার পদে সিনিয়র স্টাফ নার্স থেকে পদোন্নতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এ ধরনের পদোন্নতিতে নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীত হয় বলে এ বছর প্রথমবারের মতো বোর্ড গঠন করে পদোন্নতি দেয়া হয়।
যার কারণে একটি নোটিশ জারি করা হয়। তাতে আগ্রহী প্রার্থীদের কাছ থেকে ৩১ আগস্টের মধ্যে আবেদন চাওয়া হয়। এতে ৩৫ জন আবেদন করেন। পরে গত শুক্রবার ও শনিবার এই ৩৫ জনের মধ্যে ৩০ জনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে বৃহস্পতিবার ৭ জনকে পদোন্নতি দেয়ার আদেশ প্রকাশ করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, এই পদোন্নতি প্রদানের জন্য ৭ জনের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা করে মোট ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা নেন নার্সিং সেবা তত্ত্বাবধায়ক ও পদোন্নতি দেয়ার বিষয়ে গঠিত বোর্ডের সদস্য সচিব সেলিনা আক্তার।
পদোন্নতি বঞ্চিত একাধিক নার্স জানান, টাকার বিনিময় পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। যারা পদোন্নতি পাওয়ার যোগ্য তাদের পদোন্নতি প্রদান করা হয়নি। তবে নার্সিং সেবা তত্ত্বাবধায়ক সেলিনা আক্তার বলেন, হাসপাতাল সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ৭ জনকে পদোন্নতি দেয়া হয়।
এ পদোন্নতি দেয়ার জন্য বারবার মন্ত্রণালয়ে বলা হলেও সেটা পুরণ করা হয়নি। তাই হাসপাতাল নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বোর্ড গঠন করে এ পদোন্নতি প্রদান করেছে। কিন্তু অর্থ লেনদেনের বিষয়টি আমার জানা নেই। বোর্ড যেটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটাই হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ থাকে তবে তদন্ত করলেই বের হয়ে যাবে। আমি দোষী হলে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদ (স্বানাপ) শেবাচিম শাখার সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শুনেছি আমি পদোন্নতি পেয়েছি। তবে কোনো অর্থের বিনিময়ে নয়। অর্থ লেনদেন হয়েছে কিনা তাও জানা নেই। পদোন্নতি দেয়ার বিষয়ে গঠিত বোর্ডের সদস্য আউটডোর ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. সৌরভ সুতার বলেন, দক্ষতা, কাজের ধরন, অভিজ্ঞতাসহ বিভিন্ন দিক বিবেচনায় ৭ জনকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে।
এখানে বাণিজ্য হয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন বলেন, পদোন্নতি নয়, বাড়তি দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাদের নিজ নিজ বেতনেই বাড়তি দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। হাসপাতালের কাজের সুবিধার্থেই বোর্ডের মাধ্যমে এ পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। যদি কোনো অভিযোগ থাকে তবে তদন্ত করা হবে। প্রমাণিত হলে আইনি ব্যবস্থা ও পদোন্নতির আদেশ বাতিল করা হবে।
Leave a Reply